ডেস্ক রিপোর্ট: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১২ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হলো। স্বাভাবিক লেনদেনে ফেরার পর থেকেই শেয়ারবাজারে এই বড় উত্থান প্রবণতা চলছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপের শুরুতে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামলে গত মার্চে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়। ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় গত বুধবার থেকে শেয়ারবাজারে আবার স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়।
স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরেই বুধবার শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও বড় উত্থানের দেখা মেলে। আগের সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও বড় উত্থানের দেখা মিললো। এর মাধ্যমে তিন দিনের বড় উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৯৮ পয়েন্ট।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ সামাল দিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলেও অফিস, দোকান, শপিংমল, রেস্তোরাঁ সবকিছুই খুলছে। চলছে গণপরিবহন, ট্রেন, লঞ্চ। জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষেরও বাইরে বের হওয়ার হার বেড়েছে। এ কারণে মহামারি করোনার তাণ্ডবের মধ্যে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাছাড়া অনেক ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে। একশ্রেণির বিনিয়োগকারী এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনছেন। আবার পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আলটিমেটাম দিয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু মাঝে একবার সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে শেষ দিকের লেনদেনে টানা উপরের দিকে উঠতে থাকে সূচক। এতে দিনের লেনদেন শেষে বড় উত্থানের দেখা মেলে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ্ ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ৯৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া ১২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এর মাধ্যমে পর পর তিন কার্যদিবস শতাধিক প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ল। শতাধিক প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার দিনে দরপতন হয়েছে ৫৯টির। ১৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সূচকের এই বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ওপরে হয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫১ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস শেয়ারের। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, এমএল ডাইং, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, মুন্নু সিরামিক এবং গ্রামীণফোন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২০৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০৪টির।