ঢাকাসোমবার , ১১ নভেম্বর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দলে দূষিত রক্ত আর চাই না : কাদের

editor
নভেম্বর ১১, ২০১৯ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট: আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনগুলোতে বিতর্কিত নেতাদের ঠাঁই হবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দুঃসময়ের নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণের সম্মেলন প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্েয এ কথা বলেন তিনি।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা, লুটেরা, সন্ত্রাসীরা দুর্নীতিবাজরা সাবধান। আওয়ামী লীগের এদের ঠাঁই হবে না। মনে রাখবেন ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। ক্ষমতায় চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। বসন্তের কোকিলদের এনে দল ভারী করার চেষ্টা করবেন না। আমরা দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না।’
তিনি বলেন, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের পার্টিতে দূষিত রক্ত আর চাই না। দূষিত রক্ত বের করে দিতে হবে। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। কে কতো প্রভাবশালী তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমরা চাইবো ক্লিন ইমেজের কর্মীদের নেতা বানাতে। খারাপ লোকের কোনও দরকার নেই। খারাপ লোকেরা দলের দুর্নাম ডেকে আনে। এই খারাপ লোকেরা দুঃসময় আসলে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও এদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং যাদের সাহস আছে, কেয়ার আছে, যাদের ক্লিন ইমেজ আছে; আমি আশা করি আজকের দক্ষিণ মহানগেরর সম্মেলন থেকে ক্লিন ইমেজের দ্বারোদঘাটনের সেই সূচনা হবে। যাদের ভালো ইমেজ তাদের দিয়েই কেন্দ্রীয় সম্মেলনে নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, অন্যের বাড়ি দখলকে না বলতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পরিস্কার ম্যাসেজ, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার এই মেসেজ আমি সম্মেলনের কর্মী-নেতাদের কাছে দিয়ে গেলাম।’ এ সময় নেতা-কর্মীরা সমস্বরে এসব থেকে দূরে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা নিজের দলের মধ্যে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে তা সব রাজণৈতিক দল ও সেক্টরে চালানো হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। সৎ সাহস আছে, বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রমাণ করেছেন নিজের দল থেকে শুদ্ধি অভিযোনের সূচনা করেছেন। কেউ ছাড় পাবে না। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল বড় বড় কথা বলছেন। খোঁজ নেয়া হচ্ছে। কারা দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, খোঁজ নেয়া হবে। প্রশাসনে কারা দুর্নীতিবাজ। সব সেক্টরে খারাপ লোকদের খুঁজে বের করা হবে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যে সুনাম, অর্জন, পরিশ্রম, তার যে ত্যাগ, বার বার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এখানো তাকে বুলেট পেছনে তাড়া করে ফেরে। পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও আছেন এক ঝুকিপূর্ণ পথচলায়। আসুন শেখ হাসিনার কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, সততা নিয়ে, সাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা হাতে এগিয়ে যাই, কোনও শক্তি আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।
এর আগে ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মহানগর দক্ষিণের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস। সম্মেলন সঞ্চালনায় আছেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটু। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ ও সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ১৩ বছর এর মহানগরের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে নেতা-কর্মীরা কর্মীবান্ধব ও সৎ নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন।
২০০৬ সালের ৩১ মে ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে দুটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। উত্তরের সভাপতি নির্বাচিত হন মোবাশ্বের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হন ফরিদুর রহমান খান ইরান। দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হন দেবাশীষ বিশ্বাস। সাধারণ সম্পাদক হন আরিফুর রহমান টিটু।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, তারিক সাঈদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমবায় সম্পাদক এইচএম কামরুল হাসান আইয়ুব।
ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সাবেক সভাপতি ইসহাক মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান পান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল।
সম্প্রতি ক্যাসিনো কাণ্ডে মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওছারকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অব্যাহতি দেয়া হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকেও। স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণের সম্মেলনের একদিন পর মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির উত্তর শাখার সম্মেলন।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial