ঢাকামঙ্গলবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হবেই: তথ্যমন্ত্রী

editor
ডিসেম্বর ১৫, ২০২০ ২:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট: কিছু ধর্মভিত্তিক সংগঠন বিরোধিতা করলেও ঢাকার ধোলাইপাড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ধোলাইপাড়ে ভাস্কর্য নির্মিত হচ্ছে এবং হবেই।”
রাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ইতোমধ্যে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন জানিয়ে হাছান বলেন, সরকার ‘যে কারো সাথে’ আলোচনায় বসতে পারে।
“যারা নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে ১৫ অগাস্ট কেক কাটে, তাদের সাথেও সরকার বসেছে, শেখ হাসিনা বসেছেন। যারা সরকারকে প্রতিদিন টেনে নামিয়ে ফেলার হুমকি দেয়, প্রেসক্লাবের সামনে, নয়াপল্টনে তাদের কার্যালয়ে, তাদের সাথেও আমরা বসেছি। যারা ভাস্কার্য ইস্যুতে বিরূপ মন্তব্য করছেন, তাদের সাথে সরকার বসতেই পারে।
“কিন্তু তার মানে এই নয় যে… এই দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের অংশ হচ্ছে ভাস্কর্য। পৃথিবীর সব দেশে ভাস্কর্য আছে। সৌদি আরব থেকে শুরু করে, সৌদি আরবের বাদশার ভাস্কর্য আছে। সৌদি আরবে ভাস্কর্যের মিউজিয়াম আছে। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানে কায়েদে আজম জিন্নাহর ভাস্কর্য আছে।
“বিপ্লবের মাধ্যমে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইরানে, সেখানে ইরানি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লা খোমেনির ভাস্কর্য আছে। সুতরাং এখানে ভাস্কর্য যুগ যুগ ধরে, শত শত বছর ধরে ছিল, আছে এবং থাকবে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মিত হবেই।”
সরকার বিভিন্ন মতের মানুষের সঙ্গে ‘বসতেই পারে’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন মত-পথের সাথে বসা মানে এই নয় যে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়েছি। আমাদের অবস্থান যেখানে ছিলে সেখানেই আছে, থাকবে এবং সমস্ত মৌলবাদী অপশক্তি, যারা এই দেশটাকে পিছিয়ে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির যে ঐক্য-সংহতি, সেটি নিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে।”
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার বিরোধিতা শুরু করেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা ‘বুড়িগঙ্গায় ফেলার’ হুমকি দেন। এরপর চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সভায় হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী যে কারও ভাস্কর্য তৈরি করা হলে ‘টেনেহিঁচড়ে’ ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।
এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, লেখক-অধ্যাপক, শিল্পী-সাহিত্যিকরা।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাতে কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকের সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় বৈঠকে বসেন।
সেই বৈঠকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা মনে করি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমস্ত সমস্যা সমাধান করব। ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। যে সমস্ত কথাবার্তা আলাপের মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে, এগুলি সবই আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব।”
পদ্মাসেতু নিয়ে বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে: পদ্মাসেতু নিয়ে ‘নেতিবাচক প্রচারের’ জন্য বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।
“পদ্মাসেতু যাতে না হয়, সেজন্য অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের সাথে বিএনপি যুক্ত ছিল। আজকে রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান। সেজন্য সরকারকে বিএনপির ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন।”
পদ্মা সেতু কারো ‘পৈত্রিক সম্পত্তি নয়’ বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু অবশ্যই একটি রাষ্ট্রীয় সস্পদ৷ এই রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি রাষ্ট্রের সাথে যুক্ত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
“বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, তিনি বলেছিলেন- ‘আওয়ামী লীগ পদ্মাসেতু করতে পারবে না। আর আওয়ামী লীগ যদি জোড়াতালি দিয়ে সেতু বানায়ও, সে সেতু দিয়ে কেউ যাবে না।’ সেজন্যই আমি প্রশ্ন রেখেছিলাম, বিএনপি কি এখন সেতুর উপর দিয়ে যাবে, না কি নিচ দিয়ে যাবে?
“ফখরুল সাহেবের কথায় বোঝা যায়, তারা সেতুর উপর দিয়েই যাবেন। তবে তার আগে সরকারকে তাদের একটা ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও নেতিবাচক প্রচারের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
‘বিক্রি হওয়া’ রাজনীতিবিদ: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া রাজনীতিবিদ’ আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমানের আমলে ফখরুল সাহেবদের মত নেতাদের কেনাবেচা হয়েছে। জিয়ার আমলে যারা দলছুট রাজনীতিবিদ, তাদের হাট বসত, সেই হাটে অনেকে বিক্রি হয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবও রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া একজন রাজনীতিবিদ “
হাছান বলেন, “সেই সময় একটি ধনীক শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিলে, ব্যাংক লুটেরা শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। তখন বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীদেরকে, বিএনপি নেতাদেরকে ব্যাংক লোন দেওয়া হয়েছে, যে লোন শোধ করা হয়নি। লোন দেওয়াই হত এই লোন শোধ করতে হবে না জেনে। অর্থাৎ লুটপাট শুরু হয়েছিলে জিয়ার আমলে। আর সেই লুটটপাট ষোলকলায় পূর্ণ হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে।”

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial