ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নানান রকমের চক্রান্ত শুরু হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

editor
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩ ১০:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজকের প্রভাত রিপোর্ট: একাত্তরের হানাদার বাহিনীর দোসররা প্রেতাত্মা হয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে হত্যাকাÐ ঘটিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেকটা নির্বাচনের আগেই চক্রান্ত হয়। এখন তাদের নানান রকমের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তবে, বিশ্বাস করি‑ মানুষের শক্তি বড় শক্তি। সেই শক্তি আছে বলেই আমরা পরপর একটানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে হেয় চোখে দেখা হতো, পাকিস্তানিরা বোঝা মনে করে বলতোÑ এটা চলে গেলেই ভালো। আজকে তারা বলে, আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আমরা বাংলাদেশের মতো উন্নত হতে চাই। আর যারা বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি, তারা দেখে বাঙালিকে তো দাবায় রাখা যায় না।
তিনি বলেন, আজকে মানুষ বিদেশে গেলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পায়। আর এই সম্মানটা দিতে পারে না আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর দোসর যারা ছিল, এরাই তাদের প্রেতাত্মা হয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে হত্যা করে যাচ্ছে। হত্যার পরিকল্পনা করছে।
জিয়াউর রহমানকে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী উল্লেখ করে তার পকেট থেকে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সে দলের আচার-আচরণ কী? ভোট কারচুপি, ভোট ডাকাতি, জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া, জনগণকে খুন করা, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা, এটাই তো করে গেছে।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এসে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংসদে বসালেন। আর ঘোষণা দিলেন দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। কথায় বলে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। খুনিদের যখন সংসদে বসিয়েছেন, ওই সংসদে খালেদা জিয়া বেশিদিন বসতে পারে নাই। ১৫ ফেব্রæয়ারি নির্বাচন করলো, আর ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্ররোষে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করে তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এই কথাটা বিএনপির নেতাদের মনে রাখা উচিত যে ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া বিদায় নিয়েছিল। ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্ররোষে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করে বিদায় নিতে হয়েছিল।
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং তার উপরে হামলার চিত্র তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যেমন জিয়াউর রহমান, তেমন খালেদা জিয়া, ছেলেও একটা অমানুষ পয়দা করেছে। যে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়, এখন বিদেশে বসে হুকুম দিয়ে দিয়ে হত্যাকাÐ চালাচ্ছে।
জনগণকে আহŸান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে বাস আছে, রেললাইন আছে, যেখানে এরকম (নাশকতা) ঘটনা ঘটবে, সাথে সাথে জনগণ যদি মাঠে নামে এরা হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে পারে, এরা মানুষের জন্য সৃষ্টি করতে পারে না। এরা মানুষ খুন করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনের শান্তি-নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, মানুষের জীবনটা উন্নত করতে পারে না। কাজেই তাদের কাছ থেকে সাবধান। আর কোথাও যদি এই ধরনের রেলের ¯িøপার তুলে ফেলে, আগুন দেয়, যখনই করতে যাবে সরাসরি তাদের ধরতে হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, রেললাইন থেকে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, এরা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে কোন মুখে? হত্যাকারীরা কখনও গণতন্ত্র দিতে পারে না। এটা দেশের মানুষকে বুঝতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যারা জ্বালাপোড়াও করে, রেল লাইনের ¯িøপার তুলে ফেলে, এরা তো পরাজিত শক্তির দালাল, পরাজিত শক্তির দোসর। এদের না বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নাই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশে কোনও স্থান নাই। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তারা ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। শান্তিতে বাস করবে, উন্নত জীবন পাবেÑ সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
সারা দেশে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের আন্দোলন কী? বলছে অবরোধ, হরতাল। কিন্তু তাদের দেখা নাই। কয়েকটা গাড়ি পোড়ানো, মানুষ পোড়ানো, রেললাইন কেটে দেওয়া, বাস পোড়ানো এটাই হচ্ছে তাদের হরতাল-আন্দোলন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তারা এখন মানুষ মারার পরিকল্পনা করে। যারা মানুষ হত্যা করার পরিকল্পনা করে তারা কোন গণতন্ত্র দেবে?Ñ এটা কি বাংলাদেশের মানুষ বোঝে না? নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষ এটা বুঝতে পারে। এই জন্য তাদের আন্দোলনে সাড়া দেয় না। তাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজন আছে। তারাই সঙ্গে নাচে। সেই সঙ্গে আমাদের কিছু অতিবামপন্থিরাও এখন তাদের সঙ্গে নেমে পড়েছে। কিরকম অদ্ভুত তাদের আদর্শের বিকৃতি। একদিকে জামায়াত-শিবির, আরেকদিকে এই খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আমাদের আদর্শবাদীরা। আমি জানি না তাদের আদর্শ কোথায়?
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতিমÐলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, শহীদ বুদ্ধিজীবী সন্তান নুজহাত চৌধুরী, সম্মিলিত সংস্কৃতি জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ প্রমুখ।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial