ঢাকাশনিবার , ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নির্বাচনে কেউ নাক গলাতে এলে মেনে নেবো না: শেখ হাসিনা

editor
ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজকের প্রভাত ডেস্ক: নতুন ভোটার ও তরুণদের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা যুবসমাজ ও তরুণ সমাজ এবং প্রথমবার যারা ভোটার হবেন, শুধু কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া নয়, সারা দেশের জন্য আমার আহবান, নতুন ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করার সুযোগ করে দেবেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদেরও উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেউ যদি নাক গলাতে আসে, আমরা সেটা মেনে নেবো না।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান কলেজ মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহবানও জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই উন্নয়নে সাহায্য করতে হবে। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। সেটাই আমরা বিশ্বাস করি।
আধুনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তরুণ প্রজন্মকে স্মার্ট ও দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলবো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার, আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের সমাজব্যবস্থাও স্মার্ট করে গড়ে তোলা হবে। যেন এই বাংলাদেশ শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে ও প্রযুক্তিতে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। কারও কাছে মাথানত করে নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা শুরু করেছে। রেলের বগিতে আগুন দিয়ে মা ও শিশুকে পুড়িয়ে মারে। রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে আগুন দেয়, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, এই দুর্বৃত্তপরায়ণতা আমাদের বন্ধ করতে হবে।
যে যেখানে আছেন, যারা আগুন দেয় বা মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করে, ওদের ধরিয়ে দিন, উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে দিন, সেটাই আমি আহবান জানাবো, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশটা উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে জন্যই আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। আর এই সুযোগটা আপনারাই দিয়েছেন, কারণ নৌকা মার্কায় আমাকে ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমি জানি আমাদের এমপিদের নিজের এলাকা নিয়েই পড়ে থাকতে হয় কিন্তু আমার তো এলাকা ৩০০টা। এই ৩০০ এলাকা আমাকে দেখতে হয়। আমি দেখতে পারি কারণ, আমার দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। আমার নির্বাচন তো আপনারাই করে দেন সবাই মিলে। সেদিক থেকে আমি সবথেকে সৌভাগ্যবান। সে জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে শুরু করে যেসব সুযোগ-সুবিধা আমরা দিয়েছি, সেগুলো অব্যাহত রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং কাজ করে যাবো।
সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার আমরা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে এনেছি। আমাদের লক্ষ্য আরও কমানো। এ দেশে আর কেউ হতদরিদ্র থাকবে না। যেটুকু আছে এখন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ইনশাআল্লাহ আগামীবার নির্বাচিত হয়ে আসতে পারলে এবং জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে হতদরিদ্র বলে আর কেউ থাকবে না। একেবারে নিম্ন সম্প্রদায় থেকে শুরু করে প্রত্যেকেরই থাকা-খাওয়া, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা আমরা করে দেবো।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ- সব ধর্মের মানুষ তার সমান অধিকার নিয়ে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে, সেটাই আমরা নিশ্চিত করেছি এবং সেটাই নিশ্চিত থাকবে।
ভোট ও ভাতের অধিকার নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জনগণের অধিকার নির্বাচনের অধিকার। ভোটের অধিকার। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, ’ এই স্লোগান দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আজ ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি।
এ দেশকে নিয়ে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশি-বিদেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মিথ্যা দুর্নীতির অপবাদ দিতে চেয়েছিল। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম যে দুর্নীতি কোথায় হয়েছে, সেটা প্রমাণ করো। বিশ্বব্যাংক সে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি। কারণ, কোনও দুর্নীতি এখানে হয়নি। কানাডার ফেডারেল আদালতেও এটা প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারেনি। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণেও এ কথার উল্লেখ ছিল: ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ এবং পারেনি।
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদেরও উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারাও শাস্তি পাবে একদিন। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেউ যদি নাক গলাতে আসে, আমরা সেটা মেনে নেবো না। বাংলাদেশ কখনও মানেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পারেনি, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় আমরা অর্জন করেছি। আজ অর্থনীতির বিজয়, ইনশাআল্লাহ সেটাও আমরা একদিন অর্জন করে তাদের দেখাবো যে আমরা পারি। অন্তত দরিদ্রের হার ওই সব বড়লোকদের দেশ থেকে আরও কমিয়ে আমরা আরও উচ্চ মর্যাদায় ইনশাআল্লাহ নিয়ে যাবো।
কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসবাসীর কাছে কোনও দিন ভোট চাইতে হয়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি প্রার্থী হিসেবে আপনাদের কাছে এসেছি আপনারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আমি সেটাই আপনাদের কাছে আবেদন করছি।
তিনি বলেন, বাবা-মা-ভাই হারিয়েছি। আজ আপনাদের মাঝে হারানো বাবার স্নেহ, হারানো মায়ের স্নেহ, হারানো ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি। সেটাই আমার চলার পথের পাথেয়। আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতাই আমার চলার পথের একমাত্র শক্তি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial