ক্রীড়া প্রতিবেদক : অনুর্ধ্ব-১৫ বয়সী মেয়েদের চার জাতি আমন্ত্রণমূলক এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বুধবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটে হংকংয়ের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করবে গোলাম রব্বানী ছোটনের সুযোগ্য শিষ্যারা। আগামী ৩০ মার্চ নিজেদের প্রথম ম্যাচে মায়েশিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের কিশোরীরা। ৩১ মার্চ ইরানের বিপক্ষে এবং ১ এপ্রিল স্বাগতিক হংকংয়ের বিপক্ষে খেলবে মারিয়া-আঁখিরা। সবগুলো খেলাই হবে সিউ সাই ওয়ান স্পোর্টস গ্রাউন্ডে।
টুর্নামেন্টের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। যে দল সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাবে তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। বাংলাদেশের চোখ সেই শিরোপাতেই। দেশ ছাড়ার আগে বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সেটিই জানিয়ে গেল অধিনায়ক মারিয়া মান্দা। ভাল ফল পেতে হলে কষ্ট করতে হয়। আমরা অনেকদিন ধরেই সেই কষ্ট করে যাচ্ছি। প্রায় প্রতিদিন কঠোর অনুশীলন করেছি। সিনিয়রদের সঙ্গে একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। সেই ম্যাচগুলোতে নিজেদের ভুল সংশোধন করেছি। আমরা যেভাবে সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি,হংকংয়েও সেভাবে খেলে শিরোপা জিততে চাই।
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, জানুয়ারি থেকে মেয়েরা কঠোর অনুশীলন করছে। খেলতে যাওয়ার জন্যে যতটুকু প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল, আমরা তার সবটুকুই নিয়েছি। এই মুহুর্তে মেয়েরা পুরোপুরি প্রস্তুত। আমরা সাফে খেলেছিলাম সাউথ এশিয়ান দলের সঙ্গে। এই টুর্নামেন্টে খেলব আসিয়ান এবং সেন্ট্রাল এশিয়া দলগুলোর বিপক্ষে। তবে এই মুহূর্তে আমরাও শক্তিশালী দল। সাফে যেভাবে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, আশা করি হংকংয়েও মেয়েরা ভাল করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ মাহবুবুর রহহমান লিটু, মাহমুদা আক্তার ও দলের সহঅধিনায়ক আঁখি খাতুন। এছাড়া হংকংগামী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কোচ ছোটনের অধীনে বাংলাদেশ মহিলা দল বিগত কয়েক বছর ধরে নজরকাড়া সাফল্য পেয়ে আসছে। যেমন : এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা চ্যাম্পিয়ন (আঞ্চলিক) আসরে দু’বার (২০১৫ ও ২০১৬), এএফসি অনুর্ধ-১৬ আসরের (২০১৬) আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন একবার এবং সর্বশেষ সাফ অ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১৭) একবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল।
এছাড়া তার অধীনে সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে একবার রৌপ্যপদক অর্জন (২০১৬), দু’বার সেমিফাইনালিস্ট (২০১০ ও ২০১৪); এসএ গেমস ফুটবলে দু’বার তাম্র পদক (২০১০ ও ২০১৬) অর্জন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। তবে এখানেই থেমে যেতে চান না ছোটন। নতুন বছরে একাধিক শিরোপা হাতছানি দিচ্ছে তাঁকে। এগুলো হচ্ছে: তিনটি সাফ টুর্নামেন্ট (অনূর্ধ্ব-১৫, ১৮ এবং সিনিয়র সাফ), একটি ফুটসাল টুর্নামেন্ট (থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য) এবং এএফসি অনূর্ধ্ব–১৬ ও ১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব।
বাংলাদেশ দল: গোলরক্ষক- মাহমুদা আক্তার, রূপনা চাকমা; ডিফেন্ডার- আঁখি খাতুন (সহ-অধিনায়ক), নিলুফা ইয়াসমীন নীলা, আনাই মগিনি, নাজমা, দীপা খাতুন, রুনা আক্তার, রুমি আক্তার; মিডফিল্ডার- মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, লাবনী আক্তার, তহুরা খাতুন, মুন্নী আক্তার, শামসুন্নাহার, সোহাগী কিসকু; ফরোয়ার্ড- ঋতুপর্ণা চাকমা, সাজেদা খাতুন, আনুচিং মগিনি, শামসুননাহার, কোচ- গোলাম রব্বানী ছোটন, সহকারী কোচ- মাহবুবুর রহমান লিটু, মাহমুদা আক্তার।