ঢাকাThursday , 4 April 2024
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জনগণের সেবা করলে ভোটের চিন্তা থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

editor
April 4, 2024 10:37 pm
Link Copied!

আজকের প্রভাত রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সেবা করাকে একটি বড় কাজ হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা যদি আপনারা নিশ্চিত করতে পারেন, ভবিষ্যতে আপনাদের ভোটের কোনও চিন্তা থাকবে না। মানুষই আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে তেজগাঁওয়ে নিজের কার্যালয়ের শাপলা হলে দুই সিটি করপোরেশন কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের নবনির্বাচিত মেয়র এবং পাঁচ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের জনকল্যাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস কোনোভাবেই হারাবেন না। তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই অনুযায়ী মানুষের জন্য কাজ করুন।
সরকার দেশের প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন করেছে এবং তৃণমূলের মানুষকে ঘিরেই এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি জনপ্রতিনিধিদের জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কাজ করার এবং বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সরকার প্রধান বলেন, জনগণকে উন্নত সেবা প্রদান, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য। ইতোমধ্যে আমরা ঘোষণা দিয়েছি ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’। অর্থাৎ গ্রামের মানুষ সব নাগরিক সুবিধা পাবে।
দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের পথ থেকে সবাই যেন দূরে থাকে, সেদিকে আপনাদের লক্ষ রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র তাহসিন বাহার সুচনা এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র একরামুল হক টিটুকে শপথ বাক্য পাঠ করান। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ- এই পাঁচ জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ করান।
পাঁচটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেনÑকুড়িগ্রামের এএনএম ওবায়দুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ের আবদুল মজিদ, সিরাজগঞ্জের শামীম তালুকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিল্লাল মিয়া ও হবিগঞ্জের আলেয়া আক্তার।
পরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ৪৪ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
গত ৯ মার্চ সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে বিজয়ী হন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে তাহসিন বাহার সুচনা। তিনি কুমিল্লার প্রথম নির্বাচিত নারী মেয়র। একই দিনে অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন একরামুল হক টিটু।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে। সবার আগে যেটা দরকার, তা হচ্ছে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই এই দেশের মানুষ অন্ততপক্ষে এটুকু পেয়েছে- সরকার জনগণের শোষক নয়, সেবক হিসেবেই কাজ করে। যার কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমি অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যার বয়স ১৫ বছর, সে হয়তো ভাবতেও পারবে না যে ১৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের আগের বাংলাদেশ কী অবস্থায় ছিল? বাংলাদেশে সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা পাঁচগুণ বৃদ্ধি করেছি। সবচেয়ে বড় কথা দারিদ্র্যের হার আমরা পেয়েছিলাম ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সেখান থেকে কমিয়ে আমরা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল যে অন্তত আমরা ১৬ বা ১৭ শতাংশের নামিয়ে আনবো। যেটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাও করতে পারতাম, যদি কোভিড-১৯-এর মহামারি না দেখা দিতো। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না হতো, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির কারণে প্রত্যেকটা খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, গ্যাসের দাম বেড়েছে, পরিবহন খরচ বেড়েছে। এগুলো যদি না হতো, আমরা কিন্তু আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতাম। আমাদের দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে পারতাম।
অতি দরিদ্র প্রায় ২৫ ভাগের ওপরে ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা আমরা ৫ দশমিক ৬ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এত দ্রুত অতি দরিদ্রের হার কমানো, আমার মনে হয় বিশ্বের অন্য কোনও দেশ এটা পারেনি। আমরা লক্ষ্য স্থির করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে কেউ আর ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, অতি দরিদ্র বলে কেউ থাকবে না।
কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখান থেকে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জনগণ যাতে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে, সেদিকে তিনি জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ রাখতে বলেন।
পাশাপাশি তিনি বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার এবং প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার জন্যও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সতর্কতার অংশ হিসেবে তিনি দেশের নদী-নালা, খাল, বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় সংরক্ষণ করা এবং পানির প্রবাহকে অব্যাহত রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial