শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ, ১৪৩১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জিগাতলায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

editor
আগস্ট ৪, ২০১৮ ৪:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় রাজধানী জিগাতলা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীর লাশ থাকার গুজবকে কেন্দ্র করে এটি ভয়াবহ রূপ নেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে নিজেদের ১৭জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেন। অন্যদিকে পরে শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ঘুরে কাউকে আটক রাখার সত্যতা খুঁজে পায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিনের ন্যায় গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জিগাতলা মোড় এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা ২টার দিকে বিজিবি গেটের সামনে শত শত শিক্ষার্থীর একটি অংশের ওপর হঠাৎ করে হেলমেট পরা লাঠি হাতে ২৫-৩০ জনের এক দল যুবক হামলা চালায়। ওই সময় বিজিবির সদস্যরা গেট থেকে সামনে এসে যুবকদের থামানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও হামলাকারীরা একে অপরের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। হামলার খবর পেয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরী মোড়ে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা দলে দলে ছুটে এলে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবটি অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাউর হয়ে যায়। ধানমন্ডিতে ‘দুজন শিক্ষার্থী নিহত’ হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে চারজনকে আটক রাখার একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই শিক্ষার্থীলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে ছুটে যায়। শুরু হয় আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে শিক্ষার্থীরা। এসময় পাশে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের কার্যালয় লক্ষ্য করেও বিক্ষুব্ধরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকেও থেমে থেমে ওই এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ চলে। এর কিছু সময় পর পরিস্থিতি থমথমে হয়ে যায়।
তাদের বক্তব্য শুনে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ১০ জনকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যায়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা শিক্ষার্থীদের দলের কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান। পরে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় পরিদর্শন শেষে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলে, তারা সকাল থেকে প্ল্যাকার্ড-ব্যানার নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে অবস্থান করছিল। বিকেলের দিকে কিছু লোক হঠাৎ করে বলেন যে, ধানমন্ডিতে আন্দোলনকারী ‘দুজন শিক্ষার্থী নিহত’ হয়েছে। পরে তারা পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পায়নি। শিক্ষার্থী ‘নিহত’ হওয়ার তথ্যটি ভুল, এটি একটি গুজব ছিল।
শিক্ষার্থীদের ওই প্রতিনিধি দলকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তোমরা ঘরে ফিরে যাও। প্রধানমন্ত্রী তোমারদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন; তিনি সব সমাধান করবেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের একজন তেজগাঁ কলেজের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান অপু সাংবাদিকদের বলেন, চারজনকে ধরে কার্যালয়ে আটকে রাখার খবরে তারা ছুটে এসেছিল। এরপরই সংঘর্ষ ও ভাংচুর হয়।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আমাদের উদ্দেশে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ হামলা প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন লিখেছেন, ‘তারা কোনোরকম উসকানি ছাড়াই জিগাতলা মোড় থেকে ধানমন্ডি-৩ এর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে গিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল ছুড়েছে। অতঃপর ধাওয়া খেয়ে ফেরত এসেছে। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে, কোমলমতিদের আড়ালে আসলে কারা কী করতে চাচ্ছে, কোমলমতিদের মতিভ্রম ঘটাচ্ছে কারা। পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কারা সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে।’

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial