আজকের প্রভাত ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। তোশাখানা মামলায় বুধবার (৩১ জানুয়ারি) তাদের প্রত্যেককে একই মেয়াদের কারাদন্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। একইসঙ্গে অভিযুক্ত প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি করে জরিমানা করা হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এই খবর জানিয়েছে।
বুধবার দেওয়া রায়ে আরও বলা হয়, ইমরান খান এবং বুশরা ১০ বছরের জন্য কোনও সরকারি দায়িত্ব পালনে অযোগ্য হবেন। শুনানির সময় পিটিআই নেতা ইমরানকে হাজির করা হলেও আদালতে হাজির হননি তার স্ত্রী বুশরা।
গত মাসে, উপহার পাওয়া একটি গহনার সেট নিজেদের কাছে রাখার জন্য এই দুজনের বিরুদ্ধে একটি নতুন রেফারেন্স দায়ের করা হয়। দেশটির একটি জবাবদিহি আদালতে এই রেফারেন্স দায়ের করেছিল ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। ইমরান ক্ষমতায় থাকাকালীন সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের কাছ থেকে ওই গহনার সেটটি উপহার পেয়েছিলেন তারা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের উভয়কেই এই রেফারেন্সে অভিযুক্ত করেছিল ইসলামাবাদের একটি আদালত। দুর্নীতিবিরোধী ওয়াচডগ অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেয়াদকালে ইমরান এবং তার স্ত্রী বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশিষ্ট বিদেশি ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোট ১০৮টি উপহার পেয়েছিলেন।
বুধবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে শুনানি পরিচালনা করেছেন জবাবদিহি বিষয়ক বিচারক মোহাম্মদ বশির। ওই কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রয়েছেন।
তার উপস্থিতি নোট করার পর আদালত ইমরানকে তার বিবৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছেন। তখন ইমরান বলেছিলেন, ‘আমার বক্তব্য কারাগারে রয়েছে। এখানে আমাকে শুধু উপস্থিতি দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল।’
এরপর ‘আদালতের সময় নষ্ট করবেন না’ বলে তাকে অবিলম্বে বিবৃতি জমা দিতে বলা হয়।
সাইফার মামলার রায়ের কথা উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ‘আপনি এত ব্যস্ত কেন? এমনকি গতকালও তাড়াহুড়োর মধ্যে সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল।’
এসময় ইমরান আরও বলেন, ‘আমার আইনজীবীরা এখনও এখানে উপস্থিত হননি। ওনারা এলেই আমি তাদের দেখানোর পরই বিবৃতি জমা দেবো।’
নিজের উপস্থিতি দেখিয়ে আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান ইমরান খান। এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতেই তাদের সাজা ঘোষণা করেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশ অনুসরণ করে আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছান বুশরা। সেখানে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সেখানে এনএবি টিম উপস্থিত ছিল। পরে বুশরাকে তারা দুর্নীতিবিরোধী ওয়াচডগ হেফাজতে নিয়ে যায়।
৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আট দিন আগে আজকের এই রায় হয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সাজা পেলেন ইমরান।
এর আগে, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে ইমরান এবং তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি, প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারি গোপনীয়তা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশেষ আদালত এই রায় দেয়।
আর ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদন্ড হয় ইমরানের। তবে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) তার সাজা স্থগিত করেছিল। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে ইমরান খান আবেদন করলে একটি ডিভিশন বেঞ্চ সেটি প্রত্যাখ্যান করে।