ঢাকাসোমবার , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

র‌্যাবের অভিযানে মাদ্রাসা ছাত্র তাওহীদের হত্যাকারী গ্রেফতার

editor
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪ ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মারুফ মালেক: চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্র তাওহীদ ইসলামকে অপহরণ করে হত্যার পর সেপ্টি ট্যাংকে লাশ গুমের পরও মুক্তিপণের টাকা আদায়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীকে মুক্তিপণের টাকাসহ রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্ব-১০।
সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটায় কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ১০ ফেব্রæয়ারি ২০২৪ তারিখ রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এলাকার রসুলপুর জামি’আ ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে অধ্যয়নরত মাদ্রাসাছাত্র মোঃ তাওহীদ ইসলাম (১০) নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায় ঐদিন রাত আনুমানিক ৯:২০ ঘটিকায় অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফোন করে জানায় যে, সে তাওহীদকে অপহরণ করেছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে তিন লক্ষ টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ১১ ফেব্রæয়ারি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে।
র‌্যাব আরোও জানান, গ্রেফতারকৃত মকবুল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। ভিকটিমের পরিবার ও গ্রেফতারকৃত মকবুল একই এলাকায় বসবাস করতো এবং কিছুদিন পূর্বে গ্রেফতারকৃত মকবুল ভিকটিমের বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেছে। একই এলাকায় বসবাস এবং বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করার সুবাধে ভিকটিমের পরিবারের সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল। ভিকটিম তাওহীদের বাবা একজন প্রবাসী। তাওহীদ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে পড়াশুনা করতো। যার ফলে সে সকালে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বাসা হতে বের হতো এবং বাসায় ফিরতে প্রায়ই সন্ধ্যা হয়ে যেতো। গ্রেফতারকৃত মকবুলের ধারণা ছিল যে, ভিকটিমের বাবা প্রবাসী তাই ভিকটিমকে অপহরণ করলে মোটা অংকের মুক্তিপন আদায় করা যাবে। গ্রেফতারকৃত মকবুল প্রায় ৬ মাস যাবৎ ভিকটিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আসছিল। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ ফেব্রুয়ারি মকবুল পথিমধ্যে ভিকটিমের বাড়ীর রাস্তার পাশে ওৎ পেতে থাকে। এসময় ভিকটিম মাদ্রাসা থেকে আনুমানিক রাত ৮:৪০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্বহতে ওৎ পেতে থাকা মকবুল ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে উক্ত এলাকার নিকটস্থ একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তার হাত, পা ও মুখ বেধে রাখে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত মকবুল পূর্বে ক্রয়কৃত তার মোবাইল কৌশলে ভিকটিমের বাসায় রেখে আসে। গ্রেফতারকৃত মকবুল ভিকটিমের বাসায় রেখে আসা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এসময় মুক্তিপণের টাকা না দিলে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিলে ভিকটিমকে হত্যা করবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মুখের বাঁধন খুলে গেলে ভিকটিম ডাক-চিৎকার করলে গ্রেফতারকৃত মকবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম তাওহীদের মুখ ও গলা মাফলার দিয়ে পেচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে উক্ত এলাকার নিকটস্থ একটি সেইফটি ট্যাংকের ভিতরে ফেলে রেখে দ্রæত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
গত ১১ ফেব্রæয়ারি ২০২৪ তারিখ সকালে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে প্রথমে আব্দুল্লাহপুর বাজারে, সেখান থেকে রাজেন্দ্রপুর, তারপর রসুলপুর আসতে বলে মকবুল। এভাবে ভিকটিমের মামাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাতে থাকে। সর্বশেষ একই দিন আনুমানিক সকাল ১০:৩০ মিনিটে ভিকটিমের মামা গ্রেফতারকৃত মকবুলের কথা মতো ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের ফুটওভার ব্রিজের উপরে ৪নং পিলারের গোড়ায় নগদ তিন লক্ষ টাকা রেখে আসে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত মকবুল মুক্তিপণের টাকা নিয়ে পোস্তগোলা এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। হোটেলে অবস্থাকালীন সময় মুক্তিপনের ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকাসহ র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Please follow and like us:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial